অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : লিবিয়ার রাজনৈতিক বিভাজনও ঈদে দৃশ্যমান। দুটি পৃথক দিনে উদযাপিত হলো ঈদ। দেশের এক অংশে মাসব্যাপী রমজান ২৯ দিনে শেষ হয়েছে, অন্য অংশে পুরো ৩০টি রোজা পালন করা হয়েছে। এ কারণে দেশে বিভিন্ন দিনে ঈদের ছুটিও শুরু হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত পার্লামেন্টের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে ওই অঞ্চলের ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) ঈদের চাঁদ দেখা গেছে, তাই শুক্রবার (২১ এপ্রিল) ঈদ।
অন্যদিকে, রাজধানী ত্রিপোলির জাতীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চাঁদ দেখা যায়নি, তাই শুক্রবার রোজা থাকবে এবং শনিবার (২২ এপ্রিল) ঈদ হবে।
এ অবস্থায় শুক্রবার ঈদ উদযাপন করা ত্রিপোলির বাসিন্দা আহমেদ মেসবাহার (৫০) বলেন, ‘এটা পাগলামি। দোয়া করি এখানেই শেষ হবে। আমরা দুই ভাগে বিভক্ত, যারা রোজা রেখেছে এবং যারা রোজা রাখা বন্ধ করেছে।’
প্রতিটি দেশের সরকারী ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ সাধারণত ঈদের দিন নির্ধারণ করে। তবে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো সমর্থিত সাবেক শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফির বিরুদ্ধে ২০১১ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে লিবিয়া অস্থিতিশীল রয়েছে।
২০১৪ সালে দেশটি পূর্ব ও পশ্চিমের যুদ্ধরত দলগুলোর মধ্যে বিভক্ত হয়ে যায়। ২০২০ সাল থেকে দেশে তুলনামূলক শান্ত থাকা সত্ত্বেও, এই বিভাজন রয়ে গেছে। পূর্বাঞ্চলীয় বাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকার বাসিন্দারা শুক্রবার পুরো ঈদ উদযাপন করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, ত্রিপোলি ও পশ্চিমাঞ্চলের কিছু অংশের মানুষকে দুই ভাগে বিভক্ত হতে দেখা যায়, যারা এই দিনে ঈদ উদযাপন করেন এবং যারা করেন না। শুক্রবার রোজা রাখা ত্রিপোলির বাসিন্দা মোহাম্মদ সালেম বলেন, ‘এমন আনন্দের দিনে পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে বিভাজন বেদনাদায়ক, এতে আমি বিরক্ত। আমি আশঙ্কা করছি, লিবিয়ায় আমাদের জীবন গভীর বিভাজনের দিকে যাচ্ছে।’
ত্রিপোলিতে প্রধানমন্ত্রী আব্দুলহামিদ আল দবেইবা জানিয়েছেন, জনগণের উচিত প্রধান মুফতির সিদ্ধান্ত অনুসরণ করা এবং শনিবার পর্যন্ত অপেক্ষা করা। অপরদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রশাসনকে সমর্থন কারী সংসদ জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে ঈদ শুরু হয়েছে।
লিবিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে, ঈদকে কেন্দ্র করে বিভক্তি একই পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে, যা মুফতি সাদিক আল-ঘারিয়ানির ভূমিকা দ্বারা সৃষ্ট বিভাজনের প্রতিফলন। তাকে মুসলিম ব্রাদারহুডের ঘনিষ্ঠ হিসেবে দেখা হয়।
পূর্বাঞ্চলীয় দল এবং কিছু সালাফি (ওয়াহাবি) মুসলিম গোষ্ঠীর সঙ্গে বিরোধী ব্রাদারহুড লিবিয়ার আঞ্চলিক ও রাজনৈতিক বিরোধের একটি পক্ষ হয়ে উঠেছে।
Leave a Reply